ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর এক মাস হতে চলেছে। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধপরিস্থিতি এই দীর্ঘ সময়েও কোনো সমাধানের মুখ দেখেনি। ইউক্রেন দাবি করেছে যে ১৫ হাজারের বেশি রুশ সৈন্য মারা গেছে। সম্প্রতি রাশিয়ার নাগরিদের উদ্দেশ্যে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলছেন, যুদ্ধ থেকে আপনাদের ছেলেদের বাঁচান। বুধবার (২৩ মার্চ) দিবাগত রাতে ফেসবুকে পোস্ট করা ভিডিও বার্তায় এ কথা বলেন তিনি।
জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেন কখনোই রাশিয়ার নিরাপত্তাকে হুমকি দেয়নি। রাশিয়ান অপপ্রচারকারীরা যুদ্ধ সম্পর্কে মিথ্যা বলছে, এর জন্য তারা আপনার করের অর্থ ব্যবহার করছে। তিনি বলেন, ইউক্রেনীয়রা তাদের দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছে।
‘আমাদের ভূমি, আমাদের মানুষকে রক্ষা করতে এই যুদ্ধের অবসানের জন্য আমরা সবকিছু করছি। আমরা যখন এটা করতে সফল হব, আপনি অন্তত একটি ব্যাপারে নিশ্চিত থাকেন-আপনার সন্তানদের আর আমাদের দেশে, আমাদের ভূখণ্ডে মরতে পাঠানো হবে না’, বলেন জেলেনস্কি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, রাশিয়ার মূল পরিকল্পনা হামলার প্রথম দুই দিনে ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু রাশিয়া এখনও সব জায়গা থেকে জনশক্তি পাচ্ছে। যুদ্ধ সরঞ্জাম, যুদ্ধবিমান, বোমা, ক্ষেপণাস্ত্র এবং বিশ্বজুড়ে ভাড়াটে সেনাদের খুঁজছে। বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গুলি করতে সক্ষম যেকোনো আবর্জনা।
জেলেনস্কি বলেন, রাশিয়ার সৈন্যরা আমাদের শহরগুলো ধ্বংস করে দিয়েছে। নির্বিচারে বেসামরিক মানুষকে হত্যা করছে। নারীদের ধর্ষণ করছে। শিশুদের অপহরণ করছে এবং শরণার্থীদের ওপর গুলি ছুড়ছে। মানবিক বহরগুলোকে আটক করছে। তারা লুটপাটে লিপ্ত। তারা জাদুঘর পুড়িয়ে দিচ্ছে, স্কুল ও হাসপাতাল উড়িয়ে দিচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়, আবাসিক ভবন… যেকোনো কিছু তাদের লক্ষ্যবস্তু! রাশিয়ার সৈন্যরা মন্দের সীমা রাখছে না। ইউক্রেনের ওপর ‘নো-ফ্লাই জোন’ করার অনুরোধ পুনরাবৃত্তি করে দেশটির প্রেসিডেন্ট বলেন, ইউক্রেনের আকাশ রাশিয়ার বোমা থেকে নিরাপদ হয়নি এবং কিয়েভ বিমান, আধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী অস্ত্র বা ট্যাংক পায়নি।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রাশিয়ান সৈন্যরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে এই হামলা শুরু করে। একসঙ্গে তিন দিক দিয়ে হওয়া এই হামলায় ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে।